প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা (Ancient Civilization of Egypt)

৫০০০-৩২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়ের মিশরকে প্রাক রাজবংশীয় যুগ বলা হয়। এ সময় মিশর কতকগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল। এগুলোকে বলা হত 'নোম'। ৩২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে 'মেনেস' নামের এক রাজা সমগ্র মিশরকে একত্রিত করে একটি নগর রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। দক্ষিণ মিশরের ‘মেম্ফিস’ হয় এর রাজধানী। এভাবে মিশরে রাজবংশের সূচনা হয়।

ধর্ম: ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ বহুদেবতার পরিবর্তে একমাত্র সুর্যদেবতার আরাধনার কথা প্রচার করেন। সূর্যদেবতার নাম দেওয়া হয় এটন'। দেবতার নামের সাথে মিল রেখে তিনি নিজের নাম রাখেন 'ইখনাটন'। এভাবে ইখনাটন সভ্যতার ইতিহাসে সর্বপ্রথম ঈশ্বরের ধারণা দেন। রাজা ইখনাটনের স্ত্রী নেফারতিতি মিশরীয়দের কাছে ছিলেন সৌন্দর্য ও গৌরবের প্রতীক।

লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবনঃ মিশরীয়রা একটি লিখন পদ্ধতি উদ্ভবন করেন। প্রথম দিকে ছবি এঁকে এঁকে মিশরীয়রা মনের ভাব প্রকাশ করতে। এক একটি ছবি ছিল এক একটি অক্ষরের প্রতীক। অক্ষরভিত্তিক মিশরীয় এ হায়ারোগ্লিফিক চিত্রলিপিকে বলা হয় ‘হায়ারোগ্লিফিক’ (Hieroglyphics)। গ্রিক শব্দ 'হায়ারোগ্লিফিক অর্থ পবিত্র লিপি। প্যাপিরাস নামক এক ধরণের নলখাগড়া জাতীয় গাছের বাকল দিয়ে তারা সাদা রঙের কাগজও তৈরি করত। চিত্রশিল্পীরা চিত্রে শৈল্পিক সৌন্দর্য ফুটে তোলার জন্য দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠতল ব্যবহার করব।

স্থাপত্য ও ভাস্কর্যঃ প্রাচীন মিশরের রাজাদের বলা হত 'ফারাও' (Pharaoh) মিশরীয়রা মৃত্যুর পর আরেকটি জীবনের অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসী ছিল। সে জীবনেও রাজা হবেন ফারাও। ফারাও রাজাদের মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয় পিরামিড। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন কীর্তিস্তম্ভ পিরামিড । মিশরের সবচেয়ে বড়, পুরাতন এবং আকর্ষণীয় পিরামিত হচ্ছে  গিজার পিরামিড যা খুফুর পিরামিত হিসেবেও পরিচিত। খুফুর পিরামিড গড়ে উঠেছিল তের একর জায়গা জুড়ে এর উচ্চতা ছিল প্রায় সাড়ে চার ফুট। মিশরীয় ভাস্করদের সবচেয়ে বড় গৌরবের স্ফিংস তৈরিতে। বহুখন্ড  গায়ে ফুটিয়ে তোলা হতো এ ভাস্কর্য। স্ফিংসের দেহ সিংহের আকৃতির, আর মাথা ছিল ফারাওয়ের। ফারাওদের আভিজাত্য শক্তির প্রতীক ছিল এ মূর্তি। ফারাও তুতেনখামেন খ্রিষ্টপূর্ব ১৩৩৩ - ১৩২৪ অব্দে মিশরে রাজত্ব করেন। ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কার করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলেন।

বিজ্ঞানঃ মিশরীয়রা সর্বপ্রথম ১২ মাসে ১ বছর, ৩০ দিনে ১ মাগ এই গণনারীতি চালু করেন। যেহেতু ফারাও মৃত্যুর পর পরকালে হজা হবেন সেহেতু তাঁর মৃতদেহকে পচন থেকে রক্ষার জন্য মিশরীয় বিজ্ঞানীরা মমি তৈরি করতে শেখেন ।

Reference: জর্জ MP3 আন্তর্জা‌তিক