ছয় দফা কর্মসূচি
- ১৯৬৬ সালের ৫-৬ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধীদলীয় নেতারা একটি সম্মেলনের আহ্বান করেন। সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক 'ছয় দফা' কর্মসূচি পেশ করেন।
- পাকিস্তানি শাসন ও শোষণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
- বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য ছিল ছয় দফা দাবি আদায়ের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষা করা।
- ২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের বাঁচার দাবি নামে 'ছয় দফা কর্মসূচি' শীর্ষক একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়।
- ২৩ মার্চ, ১৯৬৬ সালে বাঙালির মুক্তির সনদ 'ছয় দফাকে' আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
- স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ে ভূমিকার জন্য ছয় দফাকে বাঙালির মুক্তির সনদ বা Magna Carta বলে চিহ্নিত করা যায়। এ কর্মসূচির ৩টি দফা ছিল অর্থনীতি বিষয়ক।
- বিচার ব্যবস্থা ৬-দফার অন্তর্ভুক্ত ছিলনা।
- ৬-দফার ১ নম্বর দফা হলো প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসন।
- ৬-দফার ৬ নম্বর দফা হলো অঙ্গরাজ্যগুলো আঞ্চলিক প্রতিরক্ষার জন্য মিলিশিয়া বা প্যারামিলিটারি বাহিনী গঠন।
- ৬ দফা কর্মসূচির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৭ জুন পূর্ববাংলায় হরতাল চলাকালে পুলিশের গুলিতে এ আন্দোলনের প্রথম শহীদ মনুমিয়া সহ অনেকে নিহত হন।
- প্রতি বছরের ৭ জুন ৬-দফা দিবস পালিত হয়।
ছয় দফা দাবিসমূহ-
১. শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় প্রকৃতি: পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাধীনে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার হবে। প্রদেশগুলোর পূর্ব স্বায়ত্তশাসন থাকবে।
২. কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা: কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়। অন্যান্য বিষয় থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
৩. মুদ্রা বা অর্থ সমন্ধীয় ক্ষমতা: দেশের দুই অঞ্চলের জন্য সহজে বিনিময়যোগ্য দুটি মুদ্রা চালু থাকবে।
৪. সকল প্রকার রাজস্ব ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে।
৫. বৈদেশিক মুদ্রা ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রদেশগুলোর হাতে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
৬. প্রদেশগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধা সামরিক বাহিনী (Para-militia) গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া হবে।