নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ইট এবং সিমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বালি ও পানির সাথে সিমেন্ট মিশিয়ে ‘মর্টার' এবং ইট বা পাথরের টুকরা, সিমেন্ট, বালি ও পানি মিশিয়ে কংক্রিট (Concrete) তৈরি করা হয়। কংক্রিটের ঢালাই (যেমন- ছাদ, কলাম) এর পর তা আর্দ্র (moist) রাখতে হয়। এই প্রক্রিয়ারে Curing বলে। কিউরিং কারণে কংক্রিট মজবুত এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
সিমেন্টঃ সিমেন্টের মূল উপাদানগুলি হলো চুনাপাথর, সিলিকা (বালি), আয়রন অক্সাইড ইত্যাদি । এই উপাদানগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (১) চুন জাতীয় পদার্থ (চক, চুনাপাথর প্রভৃতি) (২) মাটি জাতীয় পদার্থ (সিলিকা, আয়রন অক্সাইড, অ্যালুমিনা প্রভৃতি)। আমাদের দেশে পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। চুনাপাথর (Limestone) এর সাথে সামান্য কাদা বা এ্যালুমিনো সিলিকেট (Al,SiO3) মিশিয়ে বিশেষায়িত চুল্লীর মাধ্যমে ক্লিঙ্কার তৈরি করা হয়। ক্লিঙ্কার চূর্ণ (>= ৯৭%) করে তার সাথে সামান্য জিপসাম (=<৩%) মিশিয়ে আধুনিক পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট তৈরি করা হয়। সিমেন্টে জিপসাম যোগ করা হয় যাতে সিমেন্ট জমাট বাঁধতে দেরি হয় এবং কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
ইট (Brick): তৈরির পদ্ধতি অনুসারে ইটকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। বাংলা ইট, সিরামিক ইট এবং কংক্রিটের তৈরি ইট। সাধারণ ইটকে বাংলা ইট বলে। মেশিনে বানানো ইটকে সিরামিক ইট বলে। সিরামিক ইটে সিলিকা (৫৫%), অ্যালুমিনা (৩০%), লৌহ অক্সাইড (৮%), ম্যাগনেসিয়াম(৫%), জৈব পদার্থ (১%) থাকতে পারে।
বালু (Sand): নির্মাণ কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বালি। সমুদ্র বা নদীর উপকূলে, সমুদ্রের তলায়, নদীয় তলায় বালি পাওয়া যায়। বালির প্রধান উপাদান হলো সিলিকা। সিলিকার রাসায়নিক নাম সিলিকন ডাই অক্সাইড (SiO)। সিলিকার বিশুদ্ধ রূপ কোয়ার্টজ। কাচ (Glass) তৈরির প্রধান কাঁচামাল হলো বালি। কাচ রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। কাচ বহুদিন রোদে পানিতে থাকলে নষ্ট, ক্ষয় বা বৃদ্ধি হয় না।