ধ্বনি ও বর্ণ

কোনো ভাষার বাক্ প্রবাহকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতগুলো মৌলিক ধ্বনি (Sound) পাই। বাংলা ভাষাতেও কতগুলো মৌলিক ধ্বনি আছে। ধ্বনির সাথে সম্পর্কিত দুটি শব্দ ব্যাপকভাবে প্রচলিত, এর একটি Phonetics আর অন্যটি Phonology. Phonetics-এ ধ্বনির পরিভাষা, ধ্বনি, ধ্বনি উৎপন্নকারী অঙ্গ, ধ্বনির শ্রেণিকরণ এবং তার স্বরূপ প্রভৃতি আলোচনা করা হয়। Phonology-তে ভাষাবিশেষের ধ্বনি ব্যবস্থা, ইতিহাস ও তার পরিবর্তনের উপর আলোকপাত করা হয়।

প্র. ধ্বনি কী?

উ. ভাষার মূল উপাদান ধ্বনি। ভাষার ক্ষুদ্রতম একককে ধ্বনি বলে। বাংলা ভাষায় ৩৭টি মৌলিক ধ্বনি রয়েছে। মানুষের বাক-প্রত্যঙ্গ অর্থাৎ কণ্ঠনালী, মুখবিবর, জিহ্বা, আল-জিহ্বা,নাসিকা, কোমল তালু, শক্ত তালু, দাঁত, মাড়ি, চোয়াল, ঠোঁট ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলে। ধ্বনির নিজস্ব কোনো অর্থ নেই। কয়েকটি ধ্বনি মিলিত হয়ে একটি অর্থ সৃষ্টি করে। বাপ্রত্যঙ্গজাত ধ্বনির সূক্ষ্মতম মৌলিক অংশ বা একককে ধ্বনিমূল বলা হয়। ধ্বনিই ভাষার মূল ভিত্তি।

প্র. বর্ণ কী ও কত প্রকার?

উ. বাক প্রত্যঙ্গজাত প্রত্যেকটি ধ্বনি এককের জন্য প্রত্যেক ভাষায়ই লেখার সময় এক একটি প্রতীক বা চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। বাংলায় এ প্রতীক বা চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ। ধ্বনি নির্দেশক প্রতীককে বর্ণ বলে বা ধ্বনি নির্দেশক চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ। যেমন: অ, আ, ক, খ।  

বর্ণ দুই প্রকার। যথা: 

  • স্বরবর্ণ 
  • ব্যঞ্জনবর্ণ।

স্বরবর্ণ: স্বরধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে স্বরবর্ণ বলে। যেমন: অ, আ, ই, উ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনবর্ণ: ব্যঞ্জন ধ্বনি দ্যোতক চিহ্নকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে। যেমন: ক, খ, গ, ঘ ইত্যাদি।

বর্ণের নাম সংখ্যা স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ
মাত্রাহীন বর্ণ  ১০টি ৪টি (এ, ঐ, ও, ঔ)৬টি (ঙ, ঞ, ৎ, ং, ঃ, ঁ)
অর্ধমাত্রার বর্ণ ৮টি ১টি (ঋ) ৭টি (খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ) 
পূর্ণমাত্রার বর্ণ ৩২টি ৬টি (অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ) ২৬টি
Reference: অগ্রদূত বাংলা