প্র. সন্ধি কাকে বলে?
উ. সন্ধি শব্দের অর্থ মিলন। সন্নিহিত দুইটি ধ্বনির মিলনের নাম সন্ধি। পাশাপাশি দুটি বর্ণ বা ধ্বনির মিলনকে সন্ধি বলে।
যেমন: আশা+অতীত=আশাতীত; এখানে আ+অ = আ (1) হয়েছে। আবার, তৎ+মধ্যে = তন্মধ্যে; এখানে ত+ম = ন্ম হয়েছে। এই মিলন বা পরিবর্তন কয়েক রকম হতে পারে। যেমন:
ক. ধ্বনির মিলন বা রূপান্তর: রবি+ইন্দ্র = রবীন্দ্র। এখানে রবি শব্দের শেষে নিহিত ই-ধ্বনি এবং ইন্দ্র শব্দের প্রথমে ই-ধ্বনি মিলে ঈ-ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
খ. ধ্বনি-লোপ: হিম+আলয় = হিমালয়। এখানে হিম শব্দের শেষে নিহিত অ-ধ্বনি এবং আলয় শব্দের প্রথমে আ-ধ্বনি মিলিত হওয়ার ফলে অ-ধ্বনি লোপ পেয়েছে এবং আ-ধ্বনি পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়েছে।
গ. ধ্বনির বিকৃতি বা বদল বা পরিবর্তন: ধ্বনির বিকৃতি বা বদল তিন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন:
১. পূর্বধ্বনির বিকৃতি: চিৎ+ময় = চিন্ময়। পূর্বপদের ৎ বিকৃত হয়ে ন হয়েছে।
২. পরধ্বনির বিকৃতি: রাজ+নী = রাজ্ঞী। পরধ্বনির ন রূপান্তরিত হয়ে ঞ হয়েছে।
৩. উভয় ধ্বনির বিকৃতি: উৎ+হত = উদ্ধত। এখানে পূর্বধ্বনি ২ রূপান্তরিত হয়ে দঃ পরধ্বনি হ রূপান্তরিত হয়ে ধ হয়েছে এবং দুয়ে মিলে দ্ধ যুক্তব্যঞ্জন গঠন করেছে।
প্র. সন্ধির উদ্দেশ্য কী?
উ. উচ্চারণে সহজপ্রবণতা ও ধ্বনিগত মাধুর্য সম্পাদন। সন্ধির প্রধান সুবিধা হলো উচ্চারণের ক্ষেত্রে। যেমন: আশা+অতীত = আশাতীত (এখানে 'আশা' ও 'অতীত' উচ্চারণে যে আয়াস প্রয়োজন, 'আশাতীত' তার চেয়ে অল্প আয়াসে উচ্চারিত হয়)। ধ্বনি মাধুর্য রক্ষিত হয় না, সে ক্ষেত্রে সন্ধি করার নিয়ম নেই।
যেমন: কচু+আদা+আলু = কচ্চাদালু হয় না।