কোরিয় যুদ্ধ

কোরীয় যুদ্ধ (১৯৫০ ১৯৫৩ খ্রি.): কোরীয় উপদ্বীপ জাপান সাগর ও পীত সাগরের মধ্যে অবস্থিত। ১৯০৪-০৫ সালে রুশ- জাপান যুদ্ধের পর কোরিয়া জাপানের আশ্রিত রাজ্যে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর কোরিয়ায় মার্কিন এবং সোভিয়েত বাহিনী ঢুকে পড়ে। কোরিয়া উপদ্বীপকে ৩৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষরেখা (38th Parallel North) বরাবর সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণাধীন উত্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন দক্ষিণ অংশে বিভক্ত করা হয়। ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জন্ম নেয় উত্তর কোরিয়া (Democratic People's Republic of Korea) ও দক্ষিণ কোরিয়া (Republic of Korea)। ১৯৫০ সালের ২৫ জুন উত্তর কোরিয়া ৩৮ ডিগ্রি অক্ষরেখা অতিক্রম করে দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রমণ করলে যুদ্ধ বাঁধে। যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের ব্যানারে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধে নামে। চীন উত্তর কোরিয়ার পক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। বৃহৎ শক্তিগুলো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে ১৯৫০ সালের ৩ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে Uniting for peace resolution গৃহীত হয়। এতে বলা হয়, কোনো স্থায়ী সদস্যের ভেটোর কারণে নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি বিনষ্টকারী শক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হলে সাধারণ পরিষদ শান্তি রক্ষার্থে যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। ১৯৫৩ সালে দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী পানমুনজান গ্রামে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পুরানো ৩৮ ডিগ্রি অক্ষরেখাকে একটু হেরফের করে সাজানো হয়। দুই কোরিয়ার মাঝে গড়ে তোলা হয় ৪ কি.মি. চওড়া বাফার জোন 'কোরীয় অসামরিক অঞ্চল' (Korean Demilitarized Zone)।

পীত সাগরে দুই দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমাকে উত্তর সীমা রেখা (Northern Limit Line - NLL) দ্বারা বিভক্ত করা হয়। যুদ্ধশেষে কোন শান্তি চুক্তি না হওয়ায় দুই কোরিয়ার সৈন্যরা এখনো যুদ্ধাবস্থায়ই অবস্থান করে।

Reference: জর্জ MP3 আন্তর্জা‌তিক