শব্দের দ্রুতি

শব্দ প্রতি সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে শব্দের গতি বা দ্রুতি বলে। বাতাসে শব্দের দ্রুতি

সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার । কঠিন মাধ্যমে (যেমন- ইস্পাত,

লোহা প্রভৃতি) শব্দ সবচেয়ে দ্রুত চলে, তরল মাধ্যমে

(যেমন- পানি) তার চেয়ে ধীরে চলে। বায়বীয় মাধ্যমে

শব্দের দ্রুতি সবচেয়ে কম আর ভ্যাকুয়াম বা শূন্যে শব্দের দ্রুতি শূন্য। বিভিন্ন মাধ্যম শব্দের বেগের ক্রম

কঠিন > তরল > বায়বীয়

লোহার মধ্য শব্দ বাতাসের চেয়ে ১৫ গুণ দ্রুত চলে।

পানির মধ্যে শব্দ বাতাসের চেয়ে চারগুণ দ্রুত চলে।

তাই কেউ পানিতে ডুব দিয়ে হাততালি দিলে, সেই তালির শব্দ ডুবন্ত অবস্থায় থাকা ব্যক্তি জোরে শুনতে পাবে। অনুরূপভাবে, সমুদ্রের তীরে একটা বিস্ফোরণ ঘটলে এক কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের পানির নিচে অবস্থানকারী ব্যক্তি একই দূরত্বে সমুদ্রে বা ভূমিতে অবস্থানকারী ব্যক্তি অপেক্ষা আগে শুনতে পাবে ।

শব্দের দ্রুতি নিম্নোক্ত নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল যথা-

ক) তাপমাত্রা : তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে শব্দের বেগ বৃদ্ধি পায়। ১° সে. বা ১° কেলভিন তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বাতাসে শব্দের বেগ প্রায় ০.৬ মি./সে. বৃদ্ধি পায়। শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে বায়ুর উষ্ণতা বেশি থাকে বলে শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে বায়ুতে শব্দের বেগ বেশি হয় ।

খ) আর্দ্রতা : বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে গেলে শব্দের বেগ বেড়ে যায়। বায়ুর আর্দ্রতা বেশি থাকে বলে বর্ষাকালে শব্দ দ্রুততর চলে। বজ্রপাতের সময় আলোর ঝলক দেখার বেশ কিছু সময় পরে মেঘের গর্জন শোনা যায়। গর্জন এবং আলোর ঝলক একই সাথে ঘটে কিন্তু শব্দের চাইতে আলোর গতি অনেক বেশি। মেঘ ও পৃথিবীর মধ্যকার দূরত্ব অতিক্রম করতে আলোর চেয়ে শব্দের বেশি সময় লাগে । ফলে আলোর ঝলক দেখার বেশ কিছু সময় পরে মেঘের গর্জন শোনা যায়। যে বিমান শব্দের চেয়ে বেশি দ্রুতগতিতে চলে, তাকে বলা হয় সুপারসনিক বিমান। যেমন- কনকর্ড একটি যাত্রীবাহী সুপারসনিক বিমান।

Reference: MP3 বিজ্ঞান