সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপ

সমুদ্রের তলদেশের ভূমিরূপকে পাঁচটি ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা- মহীসোপান, মহীঢাল, গভীর সমুদ্রের সমভূমি, নিমজ্জিত শৈলশিরা এবং গভীর সমুদ্রখাত।

(১) মহীসোপানঃ পৃথিবীর মহাদেশসমূহের চারদিকে স্থলভাগের কিছু অংশ অল্প ঢালু হয়ে সমুদ্রের পানির মধ্যে নেমে গেছে। এরূপে সমুদ্রের উপকূলরেখা থেকে তলদেশ ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে। ১৯৮২ সালে স্বাক্ষরিত সমুদ্র আইন বিষয়ক জাতিসংঘ সনদ (UN Convention on the Law of the sea) অনুযায়ী একটি উপকূলীয় রাষ্ট্রের মহীসোপানের সীমা হবে (১) মহাদেশীয় তটরেখার বাইরের প্রান্ত থেকে প্রাকৃতিকভাবে প্রলম্বিত সমুদ্রে নিমজ্জিত অংশ অথবা (২) রাষ্ট্রের ভিত্তি রেখা হতে ২০০ নটিক্যাল মাইল (৩৭০.৪ কিমি.) - এর মধ্যে যেটি বড়। তবে মহীসোপানের জন্য ঊর্ধ্ব সীমারেখা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট ভিত্তি রেখা থেকে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল (৬৪৭.৫ কিমি.)। সমুদ্র তীর থেকে মহীসোপানের ২০০ নটিক্যাল মাইল এলাকাকে বলা হয় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল (Exclusive economic zones)।

(২) মহীঢালঃ মহীসোপানের শেষ সীমা থেকে ভূভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সঙ্গে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে ।

(৩) গভীর সমুদ্রের সমভূমিঃ মহীঢাল শেষ হওয়ার পর থেকে সমুদ্র তলদেশে যে বিস্তৃত সমভূমি দেখা যায় তাকে গভীর সমুদ্রের সমভূমি বলে। এ অঞ্চলটি সমভূমি নামে খ্যাত হলেও প্রকৃতপক্ষে তা বন্ধুর।

(৪) নিমজ্জিত শৈলশিরাঃ  সমুদ্রের অভ্যন্তরে অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি অবস্থান করছে। ঐসব আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বেরিয়ে এসে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হয়ে শৈলশিরার ন্যায় ভূমিরূপ গঠন করেছে। এগুলোই নিমজ্জিত শৈলশিরা নামে পরিচিত। 

(৫) গভীর সমুদ্রখাতঃ গভীর সমুদ্রের সমভূমি অঞ্চলের মাঝে মাঝে গভীর খাত দেখা যায়। এ সকল খাতকে গভীর সমুদ্রখাত বলে । প্রশাস্ত মহাসাগরেই গভীর সমুদ্রখাতের সংখ্যা অধিক। এ সকল গভীর সমুদ্রখাতের মধ্যে গুয়াম দ্বীপের ৩২২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ম্যারিয়ানা খাত (Mariana trench) সর্বাপেক্ষা গভীর উপকূল ।

Reference: MP3 বিজ্ঞান