জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন (Non-Aligned Movement - NAM)
দুই পরাশক্তির মধ্যেকার স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমিতে জোটনিরপেক্ষকতার ধারণা গড়ে উঠেছিল। জোট নিরপেক্ষতা হল এমন এক নীতি যার মাধ্যমে কোনো রাষ্ট্র পুঁজিবাদী বা সমাজতান্ত্রিক কোন জোটেই যোগদান করে না। অর্থাৎ ন্যাটো বা ওয়ারস জোটে যোগদান না করে উভয় জোটের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রেখে নিরপেক্ষ এবং স্বাধীনভাবে কোন আন্তর্জাতিক সমস্যা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই হচ্ছে জোট নিরপেক্ষতা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত নতুন দেশগুলো যৌথ আত্মরক্ষার প্রয়োজন অনুভব করে। এ প্রেক্ষিতে তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল শান্তিপ্রিয় দেশগুলোকে একটি জোটে এনে পরাশক্তির প্রভাব মোকাবিলা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন মিশরের প্রেসিডেন্ট জামাল আবদাল নাসের, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুকর্ন, যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো, ঘানার প্রেসিডেন্ট নজুমা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। ১৯৫৫ সালের এপ্রিল মাসে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং-এ অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনের মাধ্যমে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। নির্জোট আন্দোলনের প্রথম বৈঠক বসে ১৯৬১ সালের ১ সেপ্টেম্বর। সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে ২৫টি দেশ অংশগ্রহণ করে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের কোনো সদর দপ্তর নেই।