টেকটনিক প্লেট হলো এমন তাত্ত্বিক ধারণা যাতে বিশ্বাস করা হয় পৃথিবীর উপরিতল কিছু পাতলা, অনমনীয় প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত যারা একে অপররের দিকে চলাচল করতে সক্ষম। টেকটনিক প্লেট বিজ্ঞানের অধুনিকতম আবিষ্কার ও গবেষণার বদৌলতে এখন আর নিছক কোনো তত্ত্ব নয়, বরং বিজ্ঞানসম্মত একটি অনুঘটক যা পৃথিবীতে সংঘটিত ভূমিকম্পের জন্য দায়ী বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন। বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বটিকে ব্যবহার করা ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরির উদগীরণ, পর্বত সৃষ্টি এবং সাগর-মহাসাগর সৃষ্টির ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। সর্বপ্রথম ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে জার্মান আবহাওয়াবিদ আলফ্রেড ওয়েগেনারের মহীসঞ্চারণ তত্ত্ব থেকেই টেকটনিক প্লেট ধারণাটির জন্ম হয়। ওয়েপেনারের মতে, বহুকাল আগে পৃথিবীর সবগুলো মহাদেশ একত্রে একটি মহাদেশ ছিল (প্যানজিয়া), কালের আবর্তে যা টেকটনিক প্লেট নামক প্লেটগুলোর নড়াচড়ার আলাদা আলাদা মহাদেশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই তত্ত্বটিকে বলা হয় মহীসঞ্চারণ তত্ত্ব (কন্টিনেন্টাল ড্রিন্ট)। তার এই তত্ত্বটির উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা পরবর্তীতে বিভিন্ন গবেষণা ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত করেন আধুনিকতম তত্ত্ব নিও বৈশ্বিক টেকটনিক - যা সাধারণের কাছে প্লেট টেকটনিক বা টেকটনিক প্লেট নামে সমধিক পরিচিত।
টেকটনিক প্লেটসমূহঃ
ক) প্রধান টেকটনিক প্লেট : আফ্রিকার প্লেট, এন্টার্কটিকার প্লেট, ইন্দো-অস্ট্রেলীয় (ভারতীয় প্লেট এবং অস্ট্রেলীয় প্লেট), ইউরেশীয় প্লেট, উত্তর আমেরিকার প্লেট, দক্ষিণ আমেরিকার প্লেট এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট।
খ) অপ্রধান টেকটনিক প্লেট : আরব্য প্লেট, ক্যারিবীয় প্লেট, জুয়ান দে ফুকা প্লেট, কোকাস প্লেট, নাজকা প্লেট, ফিলিপিনীয় প্লেট, স্কশিয়া প্লেট প্রভৃতি।