সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সহোদর সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সাংবাদিক, লেখক ও পণ্ডিত। একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে তিনি ইংরেজি সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও আইনে বিশেষ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। তাঁর মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার তাঁকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ দেয়। তিনি সামাজিক অসাম্য ও সাংস্কৃতিক অনগ্রসরতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন।
প্র. সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্মসমূহ কী কী?
উপন্যাস: 'কণ্ঠমালা' (১৮৭৭), 'জলপ্রতাপ চাঁদ' (১৮৮৩), 'মাধবীলতা' (১৮৮৪)।
গল্পগ্রন্থ: 'রামেশ্বরের অদৃষ্ট' (১৮৭৭), 'দামিনী'।
প্রবন্ধ: 'যাত্রা' (১৮৭৫), 'সৎকার ও বাল্য বিবাহ'।
ভ্রমণকাহিনী: 'পালামৌ' (১৮৮০-৮২)।
প্র. 'পালামৌ' গ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ. সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাসধর্মী ভ্রমণকাহিনী 'পালামৌ' (১৮৮০-৮২)। গ্রন্থটি প্রথম 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকায় ১২৮৭ বঙ্গাব্দের (১৮৮০) পৌষ সংখ্যা থেকে শুরু করে ১২৮৯ বঙ্গাব্দের (১৮৮২) ফাল্গুন সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। লেখকের জীবদ্দশায় এটি পুস্তক আকারে প্রকাশিত হয়নি। ১৯৪৪ সালে এটি কলকাতার 'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ' থেকে পুস্তক আকারে প্রকাশিত হয়। এতে লেখক বিহার জেলার ছোটনাগপুরের পালামৌর প্রাকৃতিক পরিবেশ, অরণ্যে বসবাসরত মানুষ, জীবজন্তু ও পাখ-পাখালির জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেছেন। 'বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে'- বাক্যের মতো বিখ্যাত, শাশ্বত ও চিত্তাকর্ষক বাক্য 'পালামৌ' গ্রন্থটিকে সার্বজনীন খ্যাতিতে অনবদ্য করে তুলেছে।