সুধীন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০১-১৯৬০)

সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন ত্রিশের দশকের রবীন্দ্রকাব্যধারার বিরোধী খ্যাতিমান কবিদের অন্যতম। ফরাসী কবি মালার্মের প্রতীকী কাব্যাদর্শ তিনি অনুসরণ করেন। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, মননশীলতা ও নাগরিক বৈদগ্ধ্য তাঁর কাব্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বাংলা কবিতায় তিনি দর্শনচিন্তার নান্দনিক প্রকাশ ঘটান। তিনি বাংলা গদ্যের আধুনিক রূপেরও প্রবর্তক।

  • সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ৩০ অক্টোবর, ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার হাতিবাগানে জন্মগ্রহণ করেন। 
  • তিনি 'সবুজপত্র', 'দৈনিক ফরওয়ার্ড', 'দি স্টেটসম্যান' ও 'লিটারেরি' পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন। 
  • তিনি 'পরিচয়' (১৯৩১) নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি প্রায় ১২ বছর এ পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন।  
  • তিনি ক্লাসিক কবি হিসেবে খ্যাত এবং বাংলা পঞ্চপাণ্ডবের একজন। 
  • তিনি ২০ জুন, ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান। 

প্র. সুধীন্দ্রনাথ দত্ত রচিত কাব্যগ্রন্থসমূহের নাম কী কী? 

উ. 'তন্বী' (১৯৩০): এটি তার প্রথম কাব্য, যা তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উৎসর্গ করেন। সেখানে তিনি বলেন, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রীচরণে অঘ্য। ঋণ শোধের জন্য নয়, ঋণ স্বীকারের জন্য।'

'অর্কেস্ট্রা' (১৯৩৫): এ কাব্যের ২৫টি কবিতাই প্রেমের। প্রেমের নায়ক ভোগসর্বস্বতার শেষ পর্যায়ে ক্লান্তিবোধ করেছেন। ভেবেছেন দেহজ মিলনে যে তৃপ্তি, তারও এক সময় অবসান ঘটে, কিন্তু স্মৃতি বড় নির্মম। তাই সর্বত্রই এই স্মৃতি রোমন্থন দেখা যায়। যেমন-

'একটি কথার দ্বিধা থর থর চূড়ে, 

ভর করেছিল সাতটি অমরাবতী।'

'ক্রন্দসী' (১৯৩৭): এ কাব্যের বিখ্যাত কবিতা 'উটপাখি' (অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?)

'প্রতিধ্বনি' (১৯৫৪): এটি অনূদিত। ইউরোপের বিভিন্ন কবির কবিতার অনুবাদ।

'উত্তর ফাল্গুনী' (১৯৪০), 'সংবর্ত' (১৯৫৩), 'প্রতিদিন' (১৯৫৪), 'দশমী' (১৯৫৬)।

প্র. তাঁর রচিত অন্যান্য রচনা কী কী?

উ. প্রবন্ধ: 'কাব্যের মুক্তি'- একে আধুনিক বাংলা কবিতার ইশতেহার হিসেবে গণ্য করা হয়।

গদ্যগ্রন্থ: 'স্বগত' (১৯৩৮), 'কুলায় ও কালপুরুষ' (১৯৫৭)।

Reference: অগ্রদূত বাংলা