গণসাহিত্যের উপর কাজ করা প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ, বাংলার ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহিদ সোমেন চন্দ। তিনি মার্ক্সবাদী রাজনীতি ও সাহিত্যের আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তি এবং ঢাকার 'প্রগতি লেখক সংঘ' এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত 'কমিউনিস্ট পার্টি'র সার্বক্ষণিক গোপন কর্মী ছিলেন।
প্র. সোমেন চন্দ রচিত গ্রন্থসমূহ কী কী?
উ. 'শিশু তপন' (১৯৩৭): এটি তাঁর প্রথম গল্প। 'সাপ্তাহিক দেশ' পত্রিকায় এটি প্রকাশিত হয়।
'সংকেত ও অন্যান্য গল্প' (১৯৪৩), 'বনস্পতি ও অন্যান্য গল্প' (১৯৪৪)। ১৯৭৩ সালে ঢাকার 'কালিকলম' প্রকাশনী থেকে রণেশ দাশগুপ্তের সম্পাদনায় এই দুটি গ্রন্থের সংযুক্ত রূপ 'সোমেন চন্দের গল্পগুচ্ছ' প্রকাশিত হয়।
প্র. তাঁর গল্পগুলি কী কী?
উ. 'ইঁদুর': বাংলা ছোটগল্পের ধারায় 'ইঁদুর' একটি বিশিষ্ট গল্প। জীবনের পরতে পরতে যে বাস্তবের অনুশীলন প্রতিনিয়ত আমরা চর্চা করি, আমাদের শাণিত বোধ যেখানে আটপৌরে সমাজব্যবস্থার কাছে আনত সেখানে একটি ইঁদুরের সংগ্রাম কাহিনী সেই মানুষের বিরুদ্ধে, এটিই এ গল্পের উপজীব্য। এ গল্পটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ 'ইঁদুর' গল্প পড়েই কথাসাহিত্য রচনার অনুপ্রেরণা লাভ করেন।
'দাঙ্গা': এ গল্পটি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার উপর বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম গল্প। 'সংকেত', 'বনস্পতি', 'স্বপ্ন'।
উপন্যাস: বন্যা।
প্র. তিনি কবে নিহত হন?
উ. ৮ মার্চ, ১৯৪২ সালে বুদ্ধিজীবী, লেখক সকলে ঢাকা শহরে এক ফ্যাসিবাদ বিরোধী সম্মেলন আহবান করে। সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে। এ দিন সকালে উদ্যোক্তাদের অন্যতম তরুণ সাহিত্যিক সোমেন চন্দ ফ্যাসিবাদ সমর্থকদের হাতে নিহত হন (লক্ষ্মীবাজার হৃষিকেশ দাস লেন মোড়ে)।