'আমার যত গ্লানি' (১৯৭৩): স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিক অস্থিরতাকে আশ্রয় করে তিনি এটি রচনা করেন। এতে ১৯৪৭ সাল থেকে ২৬ মার্চ, ১৯৭১ সালের মধ্যকার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ঢাকার একটি বহুজাতিক ফার্মের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির এরফান চৌধুরী। অফিসের পর ক্লাবে বসে মদপান ও নারীসঙ্গ বিশেষত মধ্যবয়সী সুন্দরী আয়েশার সাথে সময় কাটানো তার কাজ। তবে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে আত্মকেন্দ্রিক এরফান এ সময়টাকে অস্বীকার করতে পারেনি। ব্যক্তিজীবনে নায়ক এরফান অন্তর্গতভাবে দহন হবার ফলে সামাজিক কঠিন বাস্তবতার কাছে বারংবার পরাজিত হয়। কিন্তু অন্তরাত্মাকে সজাগ রাখে বলে শেষ অবধি সে অপরাজিত থাকে। এ অপরাজেয় মানসিকতাই এ উপন্যাসের মূলসুর।
প্র. তাঁর রচিত উপন্যাসসমূহ কী কী?
উ. 'প্রেম একটি লাল গোলাপ' (১৯৭৮): উমর চরিত্রের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত জীবনের হীনমন্যতা, নিজ চরিত্রে নিহিত যৌবন বিকারের কাহিনী ফুটে উঠেছে।
'উত্তম পুরুষ' (১৯৬১): এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস, যা দেশবিভাগের প্রেক্ষাপটে রচিত। প্রধান চরিত্র শাকেরকে ঘিরে সেলিনা, অনিমা, শেখর, মুশতাক ইত্যাদি চরিত্র আবর্তিত এবং এদের মনস্তাত্ত্বিক জটিলতায় কোথাও কোথাও শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে। নগরজীবনের বৈশিষ্ট্য অবলম্বনে উপন্যাসটি রচিত। পুরো উপন্যাসে শাকের তিনটি নারী চরিত্রের নৈকট্য লাভ করে। কিন্তু তাদের পাওয়ার পথে আসে বিভিন্ন ধরনের বাঁধা। এ উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৬১ সালে 'আদমজী পুরস্কার' পান।
'প্রসন্ন পাষাণ' (১৯৬৩): প্রধান চরিত্র তিশনা এ উপন্যাসের কথক। উত্তম পুরুষের বর্ণনায় উপন্যাসটি রূপায়িত। চরিত্র: তিশনা, কামিল, আলিম।
, 'সাধারণ লোকের কাহিনী' (১৯৮২), 'শ্যামা' (১৯৮৪), 'সোনার পাথর বাটি', 'খাঁচায়', 'মায়ের কাছে যাচ্ছি', 'পদতলে রক্ত', 'বড়ই নিঃসঙ্গ', 'লাঞ্চবাক্স' (১৯৯৩)।
প্র. তাঁর রচিত প্রবন্ধগ্রন্থ সমূহ কী কী?
উ. 'আর এক দৃষ্টিকোন', 'অতীত হয় নূতন পুনরায়', 'মনের গহনে তোমার মুরতিখানি'।
গল্পগ্রন্থ: 'প্রথম প্রেম'।
আত্মজীবনী: 'জীবন মরণ' (১৯৯৯)।