প্র. তাঁর উপন্যাস দুটি কী কী?
উ. 'সারেং বৌ' (১৯৬২): এটি তাঁর প্রথম উপন্যাস। এতে সমুদ্র উপকূলবর্তী জনপদের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। কদম সারেং জাহাজের নাবিক। সৎ ও সরল বলে সহকর্মীদের মতো বাড়ি-গাড়ি করতে পারেননি, কিন্তু অভাব-অনটনেরমধ্যেও ছিলো সুখের সংসার। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মাদক পাচারের অপরাধে জেলে যেতে হয়। দীর্ঘদিন কদম সারেং নিখোঁজ থাকায় যুবতী স্ত্রী নবিতুন ডুবে যায় দারিদ্র্যের করালগ্রাসের অন্তরালে এবং নিপতিত হয় লোলুপ সমাজপতিদের শিকারের কবলে। কিন্তু আদর্শনিষ্ঠ নবিতুন সব কিছু পরাজিত করে। প্রবল ঝড়ের পর সারেং ফিরে আসলে পিপাসিত কদম সারেংকে ধর্মীয় বিধি লংঘন করে নবিতুন নিজের দুগ্ধ পান করিয়ে সুস্থ করে তোলে। 'সারেং বউ' উপন্যাসে সব সংস্কার তুচ্ছ করে মানবতাবোধকে জয়ী করা হয়েছে। উপন্যাসটির জন্য তিনি 'আদমজী পুরস্কার' (১৯৬২), 'বাংলা একাডেমি পুরস্কার' (১৯৬২) লাভ করেন।
চরিত্র: কদম সারেং, নবিতুন।
'সংশপ্তক' (১৯৬৫): এর অর্থ- নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যারা যুদ্ধ চালিয়ে যায়। উল্লেখযোগ্য চরিত্র: হুরমতি, লেকু, রমজান। (২৩তম বিসিএস লিখিত)
প্র. 'সংশপ্তক' উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ. 'সংশপ্তক' এর অর্থ- নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যারা যুদ্ধ চালিয়ে যায়। শহীদুল্লা কায়সার এ চেতনাকে ধারণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত কাল থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের পূর্বকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পরিবর্তন ও রূপান্তরকে তাঁর বিখ্যাত 'সংশপ্তক' (১৯৬৫) উপন্যাসে তুলে ধরেন। হিন্দু-মুসলিম সম্মিলিত জীবনযাপন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বযুদ্ধ, দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, ঢাকা ও কলকাতার নাগরিক পরিবেশের সঙ্গে বাকুলিয়া ও তালতলি গ্রামের গ্রামীণ পরিবেশ এ উপন্যাসে তুলে ধরেছেন।
প্র. তাঁর অন্যান্য রচনা কী কী?
উ. স্মৃতিকথা: 'রাজবন্দীর রোজনামচা' (১৯৬২)।
ভ্রমণকাহিনী: 'পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ' (১৯৬৬)।