গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ

প্র. তাঁর রচিত উপন্যাসগুলো কী কী?

উ. 'দেয়ালের দেশ' (১৯৫৬): এটি তাঁর প্রথম উপন্যাস।

'নিষিদ্ধ লোবান' (১৯৮১): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। উপন্যাসটি 'গেরিলা' নামে চলচ্চিত্রায়িত করেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ।

'নীলদংশন' (১৯৮১): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস।

'খেলারাম খেলে যা' (১৯৭৯): আত্মসুখ সন্ধানী ও ভোগবাদী চেতনার চরিত্র বাবর আলীর মস্তিষ্ককোষে ক্রিয়াশীল ফ্রয়েডীয় লিবিডোর একাধিপত্যের কাহিনী এর বিষয়। যৌন সুরসুরি এ উপন্যাসে বিদ্যমান থাকায় একে 'পিনআপ নভেল' বলা হয়। এ ধরনের উপন্যাসকে হুমায়ুন আজাদ 'অপন্যাস' বলেছেন।

'এক মহিলার ছবি' (১৯৬১), 'অনুপম দিন' (১৯৬২), 'সীমানা ছাড়িয়ে' (১৯৬৪), 'দ্বিতীয় দিনের কাহিনী' (১৯৮৪), 'আয়না বিবির পালা' (১৯৮৫), 'স্তব্ধতার অনুবাদ' (১৯৮৭), 'বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ' (১৯৮৯), 'ত্রাহি' (১৯৮৯), 'তুমি সেই তরবারি' (১৯৮৯), 'নির্বাসিতা' (১৯৯০), 'মৃগয়ায় কালক্ষেপণ', 'অন্য এক আলিখান', 'একমুঠো জন্মভূমি', 'আলোর জন্য', 'রাজার সুন্দরী'।

প্র. তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলো কী কী?

উ. 'পরানের গহীন ভিতর' (১৯৮০): এটি আঞ্চলিক ভাষারীতিতে রচিত।

'একদা এক রাজ্যে' (১৯৬১), 'বিরতিহীন উৎসব' (১৯৬৯), 'বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা' (১৯৭০), 'প্রতিধ্বনিগণ' (১৯৭৩), 'অপর পুরুষ' (১৯৭৮), 'আমি জন্মগ্রহণ করিনি' (১৯৯০), 'ধ্বংসস্তূপে কবি ও নগর' (২০০৯), 'নাভিমূলে ভষ্মাধার'।

প্র. তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য রচনাবলি কী কী?

কাব্যনাট্য:

'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়' (১৯৭৬): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাব্যনাট্য। এর রচনাকাল ১ মে থেকে ১৩ জুন, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড শহরে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে মুক্তিবাহিনীর গ্রামে প্রবেশের ঘটনা এ নাটকে স্থান পেয়েছে। (৪০তম বিসিএস লিখিত)।

'নূরলদীনের সারা জীবন' (১৯৮২): ১৭৮৩ সালের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সামন্তবাদ বিরোধী কৃষক নেতা নূরলদীনের সংগ্রাম নিয়ে রচিত এ নাটক। এ নাটকের বিখ্যাত উক্তি- 'জাগো, বাহে, কোনঠে সবায়'।

'গণনায়ক' (১৯৭৬), 'এখানে এখন' (১৯৮৮), 'ঈর্ষা'।

প্রবন্ধ: 'হৃৎকলমের টানে' (১৯৯১)।

শিশুতোষ: 'সীমান্তের সিংহাসন', 'আনু বড় হয়', 'হডসনের বন্দুক'।

গল্প: 'তাস' (১৯৫৪), 'শীত বিকেল' (১৯৫৯), 'রক্তগোলাপ' (১৯৬৪), 'আনন্দের মৃত্যু' (১৯৬৭), 'প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান' (১৯৮২), 'জলেশ্বরীর গল্পগুলো' (১৯৯০)।

প্র. মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি বাংলা নাটকের মূল্যায়ন করুন। /৩৫/৩১ তম বিসিএস লিখিত।

উ. বাংলা সাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধ অনুষঙ্গটি একে অপরের পরিপূরক। মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে অসংখ্য কবিতা, গল্প, নাটক, উপন্যাস রচিত হয়েছে। সৈয়দ শামসুল হকের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অন্যতম নাটক 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়' (১৯৭৬)। এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত তাঁর সর্বাধিক সার্থক ও মঞ্চসফল কাব্যনাট্য। এ নাটকে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী গ্রামে প্রবেশ করে। এ সংবাদে গাঁয়ের মাতব্বর আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কারণ, সে ছিল হানাদার বাহিনীর দালাল। সে দালালী করে শত্রু বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে। সে গ্রামের অল্পবয়সী মেয়েদেরকে পাকবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে, কিন্তু পাপের পরিণাম হিসেবে নিজের মেয়েকেও তাদের হাতে তুলে দিতে হয়। ফলে ঐ মাতব্বরের সামনেই তার মেয়ে আত্মহত্যা করে। এরপর মাতব্বর অনুতপ্ত হয়ে বুকফাটা আর্তনাদে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তুলে। শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। সৈয়দ শামসুল হক অসাধারণ দক্ষতায় 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়' নাটকে মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিফলিত করেন।

Reference: অগ্রদূত বাংলা