উচ্চারণ প্রকৃতি অনুযায়ী বিভাজন

স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন:

যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে দুটি বাকপ্রত্যঙ্গ পরস্পরের সংস্পর্শে এসে বায়ুপথে বাধা তৈরি করে, সেগুলোকে স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন বলে। এগুলো স্পর্শ ব্যঞ্জনধ্বনি নামেও পরিচিত। পথ, তল, টক, চর, কল শব্দের প, ত, ট, চ, ক স্পৃষ্ট ব্যঞ্জনধ্বনি। উচ্চারণস্থান অনুযায়ী এগুলোকে ওষ্ঠ্য স্পৃষ্ট, দন্ত্য স্পৃষ্ট, মূর্ধন্য স্পৃষ্ট, তালব্য স্পৃষ্ট এবং কণ্ঠ্য স্পৃষ্ট- এই পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

  • কণ্ঠ্য স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: ক, খ, গ, ঘ 
  • তালব্য স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: চ, ছ, জ, ঝ 
  • মূর্ধন্য স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: ট, ঠ, ড, ঢ 
  • দন্ত্য স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: ত, থ, দ, ধ 
  • ওষ্ঠ্য স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: প, ফ, ব, ভ

নাসিক্য ব্যঞ্জন:

যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ফুসফুস থেকে আসা বাতাস মুখের মধ্যে প্রথমে বাধা পায় এবং নাক ও মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়, সেসব ধ্বনিকে নাসিক্য ব্যঞ্জন বলে। মা, নতুন, হাঙর প্রভৃতি শব্দের ম, ন, ং নাসিক্য ব্যঞ্জনধ্বনি। 

উষ্ম ব্যঞ্জন:

যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে দুটি বাকপ্রত্যঙ্গ কাছাকাছি এসে নিঃসৃত বায়ুতে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে, সেগুলোকে উষ্ম ব্যঞ্জন বলে। সালাম, শসা, হুঙ্কার প্রভৃতি শব্দের স, শ, হ উষ্ম ধ্বনির উদাহরণ। উচ্চারণস্থান অনুসারে উষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনিগুলোকে দন্তমূলীয় (স), তালব্য (শ) এবং কণ্ঠনালীয় (হ) - এই তিনভাগে ভাগ করা যায়। এগুলোর মধ্যে স এবং শ-কে আলাদাভাবে শিষ ধ্বনিও বলা হয়ে থাকে। কারণ স, শ উচ্চারণে শ্বাস অনেকক্ষণ ধরে রাখা যায় এবং শিষের মতো আওয়াজ হয়।

পার্শ্বিক ব্যঞ্জন:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের ডগা দন্তমূল স্পর্শ করে এবং ফুসফুস থেকে আসা বাতাস জিভের দুই পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, তাকে পার্শ্বিক ব্যঞ্জন বলে। লাল শব্দে 'ল' পার্শ্বিক ব্যঞ্জনধ্বনির উদাহরণ।  

কম্পিত ব্যঞ্জন:

যে ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভ একাধিকবার অতি দ্রুত দন্তমূলকে আঘাত করে বায়ুপথে বাধা সৃষ্টি করে, তাকে কম্পিত ব্যঞ্জন বলে। কর, ভার, হার প্রভৃতি শব্দের 'র' কম্পিত ব্যঞ্জনধ্বনির উদাহরণ।  

তাড়িত ব্যঞ্জন:

যে ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের সামনের অংশ দন্তমূলের একটু উপরে অর্থাৎ মূর্ধায় টোকা দেয়ার মতো করে একবার ছুয়ে যাইয় তাঁকে তাড়িত ব্যঞ্জন বলে। যেমন ঃ ড়, ঢ় ।

 

Reference: অগ্রদূত বাংলা