নিয়মাবলী

  • ট-বর্গীয় (ট, ঠ, ড, ঢ) ধ্বনির আগে দন্ত্য-ন ব্যবহৃত হয়ে যুক্ত ব্যঞ্জন গঠিত হলে, সব সময় তা মূর্ধন্য-ণ হয়।  যেমন- ঘণ্টা, লণ্ঠন, কাণ্ড, কণ্টক, দণ্ড ইত্যাদি। 
  • তৎসম শব্দে ঋ, র, ষ এর পরে মূর্ধন্য-ণ হয়। (তৎসম শব্দে র-ফলা, রেফ, ক্ষ-এর পর মূর্ধন্য-ণ ব্যবহৃত হয়।)  যেমন- ঋণ, তৃণ, বর্ণ, বর্ণনা, কারণ, ব্যাকরণ, বিকিরণ, মরণ, সমীরণ, ভীষণ, ভাষণ, উষ্ণ ইত্যাদি।
  • ঋ, র, ষ এর পরে স্বরধ্বনি, য, য়, ব, হ, ং এবং ক-বর্গীয় ও প-বর্গীয় ধ্বনি থাকলে পরবর্তী দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়।  যেমন- কৃপণ (ঋ কারের পরে প, তার পরে ণ), হরিণ (র এর পরে ই এবং তার পরে ণ), অর্পণ (বৃ+প্+অ+ণ), লক্ষ্মণ (ক্+ষ+অ+ণ), গৃহিণী, প্রবণ, রামায়ণ, প্রণয়ন, রুক্ষিণী, ব্রাহ্মণ ইত্যাদি।   ব্যতিক্রম: আয়ুম্মান, গরীয়ান, চক্ষুম্মান, নির্গমন, পূষন, বহির্গমন, বর্ষীয়ান, রঙ্গন, শ্রীমান ইত্যাদি।
  • প্র, পরি, নির- এ ৩টি উপসর্গের পর ণত্ন বিধি অনুসারে দন্ত্য-ন ধ্বনি মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন- পরিণত, পরিণতি, পরিণয়, পরিণাম, প্রণত, প্রণয়, প্রণিধান, প্রাণিপাত, প্রবাহিণী, প্রবীণ, প্রমাণ। ব্যতিক্রম: পরিনির্বাণ, নির্নিমেষ, প্রনষ্ট, পরিবহন ইত্যাদি।
  • প্র, পরা, পূর্ব ও অপর-এ ৪টির পূর্বপদের পর 'অহ্ন' শব্দ বসলে গড় বিধি অনুসারে দন্ত্য-ন এর স্থলে মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমনঃ অপর+অহ্ন = অপরাহ্ণ
  • উত্তর, পার, চান্দ্র, নার, রাম শব্দের পরে 'অয়ন' শব্দ থাকলে ণত্ব বিধি অনুসারে দন্ত্য-ন এর স্থলে মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন- উত্তর + অয়ন = উত্তরায়ণ, পর + অয়ন = পরায়ণ
  • সমাসবদ্ধ শব্দে (সাধিত শব্দে) ণ-ত্ব বিধান খাটে না।যেমন - অহর্নিশ, ক্ষুন্নিবৃত্তি, অগ্রনায়ক, অগ্রনেতা, ছাত্রনিবাস ইত্যাদি।
  • ত-বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে 'ন' হয়। যেমন-  অন্ত, গ্রন্থ, প্রান্ত, পন্থা
  • বাংলা (দেশি), তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ণ লেখার প্রয়োজন হয় না।যেমন- কর্নেল, গভর্নর, গ্রিন, ইস্টার্ন, আয়রন, ইরান ইত্যাদি।
  • কিছু কিছু শব্দে স্বভাবতই মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন-

কিছু কিছু শব্দে স্বভাবতই মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন-

  • চাণক্য মাণিক্য গণ
  • বাণিজ্য লবণ মণ
  • বেণু বীণা কঙ্কণ কণিকা।
  • কল্যাণ শোণিত মণি
  • স্থাণু গুণ পুণ্য বেণী
  • ফণী অণু বিপণি গণিকা।
  • আপন লাবণ্য বাণী
  • নিপুণ ভণিতা পাণি
  • গৌণ কোণ ভাগ পণ শাণ।
  • চিক্কণ নিকুণ তৃণ
  • কফণি বণিক গুণ
  • গণনা পিণাক পণ্য বাণ।
Reference: অগ্রদূত বাংলা