ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস

পূর্বপদে ষষ্ঠী বিভক্তি (র, এর) লোপ পেয়ে যে সমাস হয় তাই ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস। যেমন-

  • বিশ্বের কবি = বিশ্বকবি 
  • চায়ের বাগান = চাবাগান 
  • চন্দ্রের অর্ধ = অর্ধচন্দ্র 
  • খেয়ার ঘাট = খেয়াঘাট 
  • হাঁসের রাজা = রাজহাঁস 
  • ছাত্রের সমাজ = ছাত্রসমাজ 
  • দেশের সেবা = দেশসেবা 
  • দিল্লীর ঈশ্বর = দিল্লীশ্বর 
  • বাঁদরের নাচ = বাঁদরনাচ 
  • ছবির ঘর = ছবিঘর 

ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসে 'রাজা' স্থলে 'রাজ', পিতা, মাতা, ভ্রাতা স্থলে যথাক্রমে 'পিতৃ', 'মাতৃ', 'ভ্রাতৃ' হয়। যেমন-

  • রাজার পুত্র = রাজপুত্র
  • পিতার ধন = পিতৃধন
  • মাতার সেবা = মাতৃসেবা
  • ভ্রাতার স্নেহ = ভ্রাতৃস্নেহ
  • পুত্রের বধূ = পুত্রবধূ
  • গজনীর রাজা = গজনীরাজ

পরপদে সহ, তুল্য, নিভ, প্রায়, প্রতিম - এসব শব্দ থাকলেও ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন-

  • পত্নীর সহ = পত্নীসহ
  • কন্যার সহ = কন্যাসহ
  • সহোদরের প্রতিম = সহোদরপ্রতিম / সোদরপ্রতিম

কালের কোনো অংশবোধক শব্দ পরে থাকলে তা পূর্বে বসে। যেমন: 

  • অহ্নের (দিনের) পূর্বভাগ = পূর্বাহ্ন।

পরপদে রাজি, গ্রাম, বৃন্দ, গণ, যূথ প্রভৃতি সমষ্টিবাচক শব্দ থাকলে ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন:

  • ছাত্রের বৃন্দ = ছাত্রবৃন্দ
  • গুণের গ্রাম = গুণগ্রাম
  • হস্তীর 1 যূথ = হস্তীযূথ  

অর্ধ শব্দ পরপদ হলে সমস্তপদে তা পূর্বপদ হয়। যেমন:

  • পথের অর্ধ = অর্ধপথ
  • দিনের অর্ধ = অর্ধদিন

শিশু, দুগ্ধ ইত্যাদি শব্দ পরে থাকলে স্ত্রীবাচক পূর্বপদ পুরুষবাচক হয়। যেমন:

  • মৃগীর শিশু = মৃগশিশু
  • ছাগীর দুগ্ধ = ছাগদুগ্ধ
  • কুকুরীর ছানা = কুকুরছানা

ব্যাসবাক্যে 'রাজা' শব্দ পরে থাকলে সমস্তপদে তা আগে বসে। যেমন:

  • পথের রাজা = রাজপথ
  • হাঁসের রাজা = রাজহাঁস

অলুক ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস: ঘোড়ার ডিম, মাটির মানুষ, হাতের পাঁচ, মামার বাড়ি, সাপের পা, মনের মানুষ, কলের গান, মগের মুল্লুক, পায়ের চিহ্ন, তাসের ঘর, টাকার কুমির, ডুমুরের ফুল, চোখের বালি, গরুর দুধ ইত্যাদি। 

কিন্তু,, 

  • ভ্রাতার পুত্র = ভ্রাতুষ্পুত্র (নিপাতনে সিদ্ধ)
Reference: অগ্রদূত বাংলা