বাক্যের কর্তাকেই বলা হয় কর্তৃকারক। অর্থাৎ বাক্যে ক্রিয়াটি যার দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে কর্তৃকারক বলে। বাকাস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তা ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃকারক।
বাক্যের ক্রিয়াকে 'কে/কারা' দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কর্তৃকারক পাওয়া যায়। যেমন: রহিম বাড়ি যায়। এ বাক্যে যদি প্রশ্ন করা হয় 'কে বাড়ি যায়?' উত্তর পাই রহিম। এখানে রহিমই কর্তা এবং এটি কর্তৃকারক। মেয়েরা ফুল তোলে। (এখানে কারা ফুল তোলে? উত্তর পাই- মেয়েরা। এখানে 'মেয়েরা' কর্তৃকারক।) আমরা নদীর ঘাট থেকে রিকশা নিয়েছিলাম। অনেকগুলো বন্য হাতি বাগান নষ্ট করে দিল।
বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের উপর ভিত্তি করে কর্তৃকারক ৪ প্রকার। যথা:
ক. মুখ্য কর্তা: যে কর্তা নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে থাকে, তাকে মুখ্য কর্তা বলে। যেমন: মেয়েরা ফুল তোলে। ছেলেরা ফুটবল খেলছে। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
খ. প্রযোজক কর্তা: মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন: শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন।
গ. প্রযোজ্য কর্তা: মূল কর্তা যখন অন্যের মাধ্যমে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে। যেমন: রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ায়। শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন।
ঘ. ব্যতিহার কর্তা: কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে এক জাতীয় ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন: বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। রাজায়-রাজায় লড়াই, উলুখাগড়ার প্রাণান্ত।
বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা ৩ রকম হয়।যথা:
ক. কর্মবাচ্যের কর্তা (কর্মপদের প্রাধান্য): পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
খ. ভাববাচ্যের কর্তা (ক্রিয়ার প্রাধান্য): আমার যাওয়া হবে না।
গ. কর্ম-কর্তৃবাচ্যের কর্তা (বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয়): বাঁশি বাজে। কলমটা লেখে ভাল।
কর্তৃকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার: