অপাদান কারক

যা থেকে কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয়, তাকেই অপাদান কারক বলে। যে কারকে ক্রিয়ার উৎস নির্দেশ করা হয়, তাকে অপাদান কারক বলে। যেমন: বিপদে মোরে রক্ষা করো। এখানে যদি প্রশ্ন করা হয়, কোথা থেকে রক্ষা করো? উত্তর পাই- বিপদ থেকে। তাই, এখানে 'বিপদে' অপাদান কারক।

ক্রিয়াকে 'কোথা হতে', 'কি হতে' বা 'কিসের হতে' দিয়ে প্রশ্ন করলে অপাদান কারক পাওয়া যায়। যেমন-

  • বিচ্যুত - গাছ থেকে পাতা পড়ে। মেঘ থেকে বৃষ্টি পড়ে। 
  • গৃহীত - দুধ থেকে দই হয়। শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে। 
  • জাত - খেজুর রসে গুড় হয়। জমি থেকে ফসল পাই। 
  • বিরত - পাপে বিরত হও। 
  • দূরীভূত - দেশ থেকে পঙ্গপাল চলে গেছে। 
  • রক্ষিত - বিপদ থেকে বাঁচাও। 
  • আরম্ভ - সোমবার থেকে পরীক্ষা শুরু। 
  • ভীত - বাঘকে ভয় পায় না কে?

অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তি ছাড়াও হইতে, হতে, থেকে, দিয়া, দিয়ে ইত্যাদি অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। 

যেমন: কাপটা উঁচু টেবিল থেকে পড়ে ভেঙে গেল।

অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার:

  • প্রথমা বা শূন্য বা অ বিভক্তি: বোঁটা-আলগা ফল গাছে থাকে না। 'মনে পড়ে সেই জৈষ্ঠ দুপুরে পাঠশালা পলায়ন। গাড়ী স্টেশন ছাড়ে।
  • দ্বিতীয়া বা কে- বিভক্তি। বাবাকে বড্ড ভয় পাই।
  • ষষ্ঠী বা এর- বিভক্তি: যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়।।
  • সপ্তমীর এ- বিভক্তি। বিপদে মোরে করিবে ত্রাণ, এ নহে মোর প্রার্থনা। তিলে তৈল হয়। লোকমুখে শুনেছি।
  • সপ্তমীর য় বিভক্তি। টাকায় টাকা হয়।

 

বিভিন্ন অর্থে অপাদানের ব্যবহার:

  • স্থানবাচক: তিনি নাগেশ্বরী থেকে এসেছেন।
  • দূরত্ববাচক: ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম চারশো কিলোমিটারেরও বেশি।
  • নিক্ষেপ: বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়েছে।
Reference: অগ্রদূত বাংলা