অন্যান্য বিরাম চিহ্ন

প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?): বাক্যে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে,   বাক্যের শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে। যেমন: তুমি কখন   এলে? সে কি যাবে? তারা কখন এসেছে? বাংলাদেশের   রাজধানীর নাম কী?

বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন (!): হৃদয়াবেগ প্রকাশ করতে হলে এবং   সম্বোধন পদের পরে বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন বসে। সাধারণত   বিস্ময়, দুঃখ, আনন্দ ইত্যাদি প্রকাশের জন্য বিস্ময়চিহ্ন   ব্যবহৃত হয়। যেমন: আহা! কি চমৎকার দৃশ্য! জননী! আড্ডা   দেহ মোরে যাই রণস্থলে! মানে কী! সে আর চাকরি করবে না।   তার গানের কন্ঠ দারুণ।   উল্লেখ্য, আধুনিক নিয়মে সম্বোধন স্থলে কমা চিহ্নের ব্যবহার   করা হয়।।

কোলন (:): একটি অপূর্ণ বাক্যের পরে অন্য একটি বাক্যের   অবতারণা করতে হলে কোলন ব্যবহৃত হয়। বাক্যের প্রথম   অংশের কোনো উক্তিকে দ্বিতীয় অংশে ব্যাখ্যা করা এবং   উদাহরণ উপস্থাপনের কাজে কোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন: সভায়   সাব্যস্ত হলো: এক মাস পরে নতুন সভাপতি নির্বাচিত করা   হবে। ভাষার দুটি রূপ: কথ্য ও লেখ্য। সভার সিদ্ধান্ত হলো:   প্রতি মাসে সব সদস্যকে দশ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে।

কোলন ড্যাস (:-): উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগ করতে হলে কোলন   এবং ড্যাস চিহ্ন এক সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। যেমন: পদ পাঁচ প্রকার:-   বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।

 ইলেক বা লোপ চিহ্ন ('): কোনো বর্ণ বিশেষের লোপ বোঝাতে বিলুপ্ত বর্ণের জন্য লোপচিহ্ন দেয়া হয়। যেমন- মাথার 'পরে জ্বলছে রবি। ('পরে - ওপরে)

উদ্ধরণ চিহ্ন (""), ("): বক্তার প্রত্যক্ষ উক্তিকে এই চিহ্নের অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। কোনো কিছু উদ্ধৃত করার কাজে এ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এ চিহ্ন দুই রকম (একক ও দ্বৈত)। যেমন: 'সিরাজউদ্দৌলা' একটি ঐতিহাসিক নাটক। শিক্ষক বললেন, "গতকাল তুরস্কে ভয়ানক ভূমিকম্প হয়েছে।" আমার কণ্ঠ শুনে প্রিয়ন্তি ঘর থেকে বেরিয়ে এল, "ও আপনারা এসে গেছেন। বাসা চিনতে কোনো কষ্ট হয়নি তো।"

ব্রাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন (), [], []: এই তিনটি চিহ্নই গণিতশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়। তবে প্রথম বন্ধনীটি বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থে সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়। অতিরিক্ত তথ্য উপস্থাপন ও কাল নির্দেশের ক্ষেত্রে বন্ধনীর ব্যবহার হয়। যেমন: ত্রিপুরায় (বর্তমানে কুমিল্লা) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা ভাষার বিবর্তন (চর্যাপদের সময় থেকে পরবর্তী) নিয়ে আলোচনা করেন। কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) 'বিদ্রোহী কবি' হিসেবে পরিচিত।

বিন্দু (.): শব্দসংক্ষেপ, ক্রমনির্দেশ ইত্যাদি কাজে বিন্দু ব্যবহৃত হয়। যেমন: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রখ্যাত বৈয়াকরণিক। ভাষার উপাদান চারটি:- ১. ধ্বনি, ২. শব্দ, ৩. বাক্য ও ৪. বাগর্থ।

ত্রিবিন্দু (...): কোনো অংশ বাদ দিতে চাইলে ত্রিবিন্দুর ব্যবহার হয়। যেমন: তিনি রেগে গিয়ে বললেন, "তার মানে তুমি একটা...।" আমাদের ঐক্য বাইরের।... এ ঐক্য জড় অকর্মক, সজীব সকর্মক নয়।

বিকল্প চিহ্ন (/): একটির বদলে অন্যটির সম্ভাবনা বোঝাতে বিকল্পচিহ্নের ব্যবহার হয়। যেমন: শুদ্ধ/অশুদ্ধ চিহ্নিত করো।

 

Reference: