বাংলাদেশ সরকার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করে ২০১২ সালে।
জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল অনুসারে 'শুদ্ধাচার' হচ্ছে সততা ও নৈতিকতা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ।
সরকারি চাকরিতে সততার মাপকাঠি হলো নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি সম্পন্ন করা।
নাগরিকদের কম সময়ে ও কম খরচে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সেবা ও তথ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার দেশের সকল ইউনিয়ন ও পৌরসভায় চালু করেছে ডিজিটাল সেন্টার।
'আইনের চোখে সব নাগরিক সমান' বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭নং ধারায় এ নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনে সরাসরি অভিযোগ জানানোর লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে হটলাইন যার নম্বর ১০৬।
বিভিন্ন হটলাইন নম্বর:
৯৯৯
জরুরী সেবা
৩৩৩
তথ্য সেবা
১০৬
দুদক
১০৯/১০৯২১
নারী ও শিশু নির্যাতন
১০৯৮
শিশু সহায়তা
দুর্নীতি দমন ও জনগণের সেবা ও তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার গৃহীত একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা।
সরকারি সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়েছে - Utility Payment Platform (UPP)।
সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াতে চালু করা হয়েছে - IBAS++ (Integrated Budget & Accounting System)।
IBAS++ এ পাওয়া যাবে - সরকারি লেনদেন ও নগদ অবস্থার তাৎক্ষণিক চিত্র।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করা এবং উন্নয়নের সুফল সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন - মৌলিক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও সুশাসন।
দারিদ্র্য নিরসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার প্রবর্তিত একটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হচ্ছে - সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি।
সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে লক্ষ্যভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার লক্ষ্যে প্রবর্তন করা হয়েছে - জি-টু-পি পদ্ধতি।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে সরকার প্রণয়ন করেছে - জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (National Social Security Strategy)।
সরকারি ক্রয়ে অধিকতর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে টেন্ডার প্রক্রিয়াকরণে প্রবর্তন করা হয়েছে - E-GP (Electronic Government Procurement)।
দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে World Bank এবং World Food Program (WFP)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে "বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র" এবং দারিদ্র্য বিষয়ক তথ্য ভাণ্ডার (Poverty Database)।
পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা আনয়নে ঢাকা ও চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা হতে ট্রেডিং রাইটসকে পৃথক করা হয়েছে এক্সচেঞ্জ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন-২০১৩ অনুসারে।
সরকারি কাজে গতিশীলতা আনয়নে প্রবর্তন করা হয়েছে - ই-ফাইলিং পদ্ধতি।
জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার লক্ষ্যে অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা (Grievance Redress System-GRS) চালু করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের জন্য National Integrity Strategy Support Project (NISSP) এর মাধ্যমে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মামলার দীর্ঘসূত্রিতা ও হয়রানি কমাতে সরকার বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছে।
স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়েছে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে।
২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী দুর্নীতিকে সর্বস্তরে নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালাতেও অসদাচরণ, দুর্নীতি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ফৌজদারি অপরাধের জন্য দণ্ড দেওয়ার প্রথম আইন। এই সবগুলো আইন দুর্নীতিকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
জাতিসংঘের Manual on Anti-Corruption Policy অনুযায়ী, "Corruption is the abuse of public office for private gain"।
সংবিধানের ১১৭ নং অনুচ্ছেদে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার বিষয়টি ১৮ নং অনুচ্ছেদে আলোচিত হয়েছে।
সংবিধানের ৭৭ নং অনুচ্ছেদে ন্যায়পাল বিধানটি যুক্ত করা হয়েছে।
১৯৮০ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ন্যায়পাল আইন পাস হয়, যা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশের রাজস্ব খাতে প্রতি বছর ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের কাছে সবচেয়ে পরিচিত ও আকাঙ্ক্ষিত প্রত্যয় হলো সুশাসন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় বাধা হলো দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার অভাব।
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হলো স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা।
১ নভেম্বর, ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ স্বাধীনতা লাভ করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন, মানবাধিকার কমিশন গঠন, রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট প্রণয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রশাসনিক রিফর্ম কমিটি গঠন, স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।
সরকারি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে 'স্বার্থের সংঘাত' (Conflict of interest) তখনই হয় যখন গৃহীতব্য সিদ্ধান্তের সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর নিজের বা পরিবারের সদস্যদের স্বার্থ জড়িত থাকে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয় ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে।
লর্ড ব্রাইস এর মতে, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন হলো গণতন্ত্রের সূতিকাগার, এবং এর যথাযথ অনুশীলন গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্যতম রক্ষাকবচ।
বাংলাদেশের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হলো ইউনিয়ন পরিষদ।
শহরগুলোর জনগণের স্থানীয় সমস্যার সমাধান এবং উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হলো পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন।
জনগণের স্বার্থে সেবাদানকারী অলাভজনক সংস্থা হলো এনজিও।